বাংলাদেশের স্বাধীনতার গৌরবগাথা ইতিহাসের এক অনন্য প্রতীক হলো জাতীয় স্মৃতিসৌধ (National Martyrs’ Memorial)। এটি শুধু একটি স্থাপত্য নয়, বরং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মহান আত্মত্যাগ ও স্বাধীনতার অমর চেতনার প্রতীক। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব বীর সন্তান জীবন উৎসর্গ করে স্বাধীনতার সূর্য ফিরিয়ে এনেছিলেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের স্থান এই স্মৃতিসৌধ। ঢাকার অদূরে সাভারের সবুজ প্রান্তরে অবস্থিত এই স্মৃতিস্তম্ভটি জাতির আত্মমর্যাদা, সাহস ও ত্যাগের চিরন্তন স্মারক হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এখানে এসে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়, ইতিহাসকে স্মরণ করে এবং স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি করে। এটি আজ শুধু একটি স্থাপত্য নিদর্শন নয়—এটি স্বাধীনতার অনুপ্রেরণার উৎস, জাতীয় গর্বের প্রতীক, এবং বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
মৌলিক তথ্য
- অবস্থান: সাভার, ঢাকা
- নির্মাণ শুরু: ১৯৭৮
- স্থপতি: সৈয়দ মাইনুল হোসেন
- উদ্বোধন: ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৮২
গুরুত্ব ও প্রতীকী তাৎপর্য
- শহীদদের শ্রদ্ধা: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নির্মিত।
- সাতটি ত্রিভুজ স্তম্ভ: একাত্তরের সাতটি আন্দোলনের ধাপ ও আত্মত্যাগের প্রতীক।
- স্থাপত্যশৈলী: অনন্য ও গর্বের প্রতীক।
- উদ্যান ও পরিবেশ: সবুজ ঘাসের মাঠ, জলাধার ও পরিষ্কার পরিবেশ।
- জনপ্রিয় দর্শনস্থান: প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থীর আগমন।
বিশেষ দিবস
- ২১ ফেব্রুয়ারি – আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
- ২৬ মার্চ – স্বাধীনতা দিবস
- ১৬ ডিসেম্বর – বিজয় দিবস
এই দিনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো মানুষ স্মৃতিসৌধে আসেন।
খোলার সময়সূচি
- শনিবার–বৃহস্পতিবার: সকাল ৯টা – সন্ধ্যা ৫টা
- শুক্রবার: সকাল ৮টা – সন্ধ্যা ৬টা
জাতীয় দিবসের আগে ২-৩ দিন এবং অনুষ্ঠান চলাকালে প্রবেশ সীমিত থাকতে পারে।
প্রবেশ মূল্য
- বিনামূল্যে – জাতীয় স্মৃতিসৌধ সবার জন্য উন্মুক্ত।
কিভাবে যাবেন
- বিআরটিসি বাস: মতিঝিল → শাহবাগ → ফার্মগেট → গাবতলী → সাভার
- হানিফ, গ্রীনওয়ে, নন্দন: মতিঝিল/গুলিস্তান → নবীনগর → সাভার
- তিতাস পরিবহন: মিরপুর ১২ → মিরপুর ১০ → টেকনিক্যাল → গাবতলী → সাভার
অতিরিক্ত টিপস
- সকাল বা বিকেলে ঘুরলে আবহাওয়া আরামদায়ক ও ভিড় কম থাকে।
- পরিবারসহ উপভোগ্য — শিশুদের জন্য শিক্ষণীয় স্থান।
- ছবি তুলুন, তবে স্থানের মর্যাদা রক্ষা করে আচরণ করুন।
